ইয়োগা, আকুপ্রেশার থেরাপি, প্রানায়ম (শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম), হিজামা (কাপিং থেরাপি)।

ব্যথা-যন্ত্রণাঘটিত অসুখ উপশম করার প্রমাণও পাওয়া গেছে এই রিসার্চেই। সংক্ষেপে বলতে গেলে নিচের অসুখগুলোতেও কাপিং-এর কার্যকারিতা পাওয়া গেছে :




• lumbar discherniation,
• cervical spondylosis,
• brachialgia paraesthetica noc turna,
• persistent non-specific low back pain,
• fibrositis,
• fibromyalgia,
• chronic non-specific neck pain,
• chronic knee osteoarthritis,
• pain of dysmenorrhea,
• pain of acute gouty arthritis,
• neurological conditions as headache and migraine,

• acute trigeminal neuralgia.....     

ইত্যাদি !

 হিজামা (কাপিং থেরাপি)

সুস্থ দেহ-মনের জন্যে কত কিছুই না করি আমরা। পেশিবহুল দেহের জন্যে ব্যায়াম করি। স্টেমিনা বৃদ্ধির জন্যে দৌড়-সাঁতার ইত্যাদি নিয়মিত করেন অনেকে। ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম, নাচের ক্লাস ইত্যাদি নিয়ে দারুণ ব্যস্ত এমনই এক নারী অ্যালিসন ফেলার। কয়েক বছর আগে হঠাৎ করেই একদিন ইয়োগা এর একটি ক্লাস করলেন। বাড়িতে প্রথম ইয়োগা করার পরই তার জীবনটা বদলে গেলো। এখন তার প্রতিদিনের জীবনের অন্যতম জরুরি কাজের একটি ইয়োগা। 

এর সম্পর্কে ৮টি এমন তথ্য জেনে নিন, যার কথা আপনাকে অন্য কেউ বলবে না। 

. ইয়োগা এক ধরনের চর্চা। এর কোনো শেষ নেই এবং প্রতিদিন ক্রমাগত কাজের মাধ্যমে উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ইয়োগা আপনাকে যাবতীয় চাপ থেকে মুক্তি দেবে। প্রতিনিয়ত একে আরো চ্যালেঞ্জিং করে নিতে পারেন যা সত্যিই উপভোগ্য হয়ে উঠবে। 

. ইয়োগার বিশেষ কলা-কৌশল প্রতিদিন চর্চা করতে হয়। অনেকেই মনে করেন, দেহকে কেবল স্থিতিস্থাপকতা প্রদানই ইয়োগার কাজ। এর ব্যাপ্তি অনেক বেশি। 

. যারা ইয়োগা কোর্স করেন, তারা সাধারণত প্রথম বছর প্রাথমিক কৌশলগুলো চর্চা করেন না। সবাই আর পরের কাজগুলো দ্রুত করে ফেলতে চান। কিন্তু প্রাথমিক কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে আয়ত্ত করতে পারলে দারুণ সুফল পাওয়া যায়। 

. অধিকাংশ ইয়োগা ক্লাসে একটি কৌশলের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখিয়ে দেওয়া হয়। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, এসব চর্চার মাঝখানে বিরতি নিতে পারবেন আপনি। ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা নেই। এমনকি ক্লাসের মধ্যেও আপনি বিরতি নিতে পারেন ইচ্ছেমতো। 

. অনেকেই ইয়োগার কিছু কৌশল দেখে ভয় পেয়ে যান। অনেকে কাছে কিছু কলা-কৌশল যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। দেহের জন্যে আরামদায়ক নয় এমন কাজ করতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। আবার অনেকে অনেক রকম পোজের ছবি তুলে দেন যা আসলে সবার পক্ষে করা সম্ভব নয়। 

. ইয়োগা শুধু দেহের সঙ্গে নয়, মনের জন্যেও কাজ করে। ইয়োগা আপনাকে আরো বেশি দয়াশীল, ধৈর্যশীল এবং সহনশীল হতে শেখায়। জীবনের অনেক মানসিক অশান্তি দূর হয়ে যাবে। 

. ইয়োগা কেবলমাত্র ম্যাটে বসে থেকে নিঃশ্বাস নেওয়া এবং নিচের মাটি অনুভব করা নয়। এটি কিছুটা কঠিন বৈকি। কোনো পোজ সহজ মনে হলে একে আরো চ্যালেঞ্জিং করে নেওয়ার চেষ্টা করুন বা প্রশিক্ষককে বলুন। 

. মনোযোগ ঢাললে আপনি নিশ্চিতভাবে ইয়োগার প্রেমে পড়বেন। অনুভব করবেন, আপনার পারফরমেন্স, মেজাজ এবং স্বাস্থ্য হঠাৎ করেই ভিন্নমাত্রায় পৌঁছে গেছে। এই ভালোলাগা উপলব্ধি করলেই ইয়োগা আপনার জীবনের অঙ্গে পরিণত হবে। সূত্র : হাফিংটন পোস্ট

"হিজামা : একটি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান"


হিজামা বা কাপিং থেরাপি মূলত একটি প্রাচীন চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। খ্রি:পূ: ২০০০ সালে চীনে খ্রি:পূ: ১৫৫০ সালে মিশরে এর প্রচলন পাওয়া যায়। মধ্যপ্রাচ্যেও এর রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস।
শরীরের বিভিন্ন পয়েন্টে কাপ-জাতীয় বস্তু দিয়ে নেগেটিভ প্রেসার তৈরি করে চোষণ প্রক্রিয়া (sucking action) দ্বারা কাপ বসানো এলাকায় টিস্যু তরল জমে, রক্তনালী ফেটে গিয়ে লাল হয়ে যায়, রক্ত বের হয়ে জমে যায় (dry cupping) কখনও স্কালপেল দিয়ে সামান্য কাটা হয়, ফলে কাপের ভেতর নেগেটিভ প্রেসারে রক্ত এসে জমে। সর্বোচ্চ ১০০ মি.লি.-২০০ মি.লি. পর্যন্ত রক্ত বের করা হয়ে থাকে (wet cupping)

বর্তমান বিশ্বের অসংখ্য বডিবিল্ডার, রেসলার, ক্রীড়াবিদ, কুস্তিগির স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা নিয়মিত হিজামা করান। অলিম্পিকের অসংখ্য ক্রীড়াবিদকেও নিয়মিত হিজামা করাতে দেখা যায়। শরীরের বিভিন্ন প্রকার ব্যথা থেকে শুরু করে নানা প্রকার রোগ সারাতে এটা কার্যকরী বলা হয়ে থাকে। তাছাড়া ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে উৎসাহিত হওয়ায় মুসলিমদের মধ্যেও এটি দিন দিন বিখ্যাত হচ্ছে। তবে শারীরিক উপকারিতা বা রোগ উপশমের চিন্তা ছাড়াও নবীজি (সাঃ) এর সুন্নাত বলেই মুসলিমরা হিজামা করায় বেশী।

অবশ্য পশ্চিমের হাতেগোনা কিছু গবেষকদের দেখা যায় এর বিরোধীতা করতে, ঢালাওভাবে এটিকে অপবিজ্ঞান-অবৈজ্ঞানিক-কুসংস্কার বলে প্রচার করতে। সেই সুবাদে আমাদের দেশেও কিছু লোককে অন্ধভাবে এই সুরে তাল মেলাতে দেখা যায়। এর সাইন্টিফিক উপকারিতা বিভিন্ন স্টাডিতে পাওয়া গেলেও কোন রিসার্চে স্বতঃসিদ্ধভাবে প্রমাণিত নয় সত্য, তবে তাদের প্রচারকৃত ন্যারেটিভের আদতে কোনো সত্যতা নেই, তাদের এই অপপ্রচারের আলাদা উদ্দেশ্য কারণ রয়েছে, বিস্তারিত অন্যদিন।
এখানে শুধু হিজামার উপকারিতা বা কাপিংয়ের সাইন্টিফিক বেনিফিটস নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হবে। বিভিন্ন রিসার্চ স্টাডির বিস্তারিত রেফারেন্স থাকছে সাথে, তাই বড় লেখা পড়ার ধৈর্য না থাকলে থাকলে শুধু চোখ বুলিয়ে যান।

১৯৫০ সালে চীনা রাশিয়ান গবেষকদের যৌথ রিসার্চে কাপিং-এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হওয়ায় এরপর পুরো চীনে এটা অফিসিয়াল চিকিৎসা পদ্ধতি (formal modality/ official therapeutic practice) হিসেবে গৃহীত হয়। মানে চীনে এটাই মেইনস্ট্রিম চিকিৎসা। ফলে পরবর্তীতে চীনে এর ওপর আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করেই বহু বিসার্চ হয়েছে, আরও ডেভলপ হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমা মেডিকেল সায়েন্স কাপিং-কে এতকাল অপবিজ্ঞান, অপচিকিৎসা বলে এসেছে।

পশ্চিমা মেডিসিনের অন্ধ অনুসারী হিসেবে ৩য় বিশ্বের অনেক ডাক্তাররাও একে পাত্তা দেয়নি, এরপরও তুলনামূলক ভালো ফল পাওয়ার বদৌলতে ইউরোপ-আমেরিকা জুড়ে কাপিং থেরাপি ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পশ্চিমা একাডেমিয়া একে কীভাবে দেখছে একটু আলোচনা করা যাক।


[এক]

  • বিখ্যাত জার্নাল PLos One- একটি রিভিউ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালে (Cao, 2012) টা

ডেটাবেস থেকে ১৯৫৮-২০০৮ সালে করা ৫৫০ রিসার্চ পেপার পাওয়া যায়।
যার অধিকাংশ জানাচ্ছেযেকোনো ব্যথা, হার্পিস ভাইরাসঘটিত নার্ড ব্যথা, কাশি শ্বাসকষ্টে কাপিং-এর সম্ভাব্য উপকারিতা রয়েছে। এই সবগুলোর ওপর টা সিস্টেমেটিক রিভিউ হয়েছে, যেই টা আবার রিভিউ করে Lee et al. জানিয়েছেন, এটা শুধু ব্যথা জাতীয় রোগে কার্যকর। তবে রিসার্চগুলো Cochrane risk of bias tool মোতাবেক (যা দিয়ে রিসার্চের নিরপেক্ষতা যাচাই করা) হয়। দুর্বল।
১ম পর্বের সমস্যা ' এর আলোচনা গুলো মনে করার চেষ্টা করুন।

[*]
এনারা কেবল ১৯৯২-২০১০ সালের মাঝে হওয়া ১৩৫ টা রিসার্চ রিভিউ করলেন, যার ১৩৫-টাই চীনা ভাষায়। মানে পশ্চিমা বিশ্ব এটা নিয়ে গবেষণাই করে নাই, যা করেছে সব চীনারা। দেখা গেল ৫৬ টা অসুখকে কাপিং দ্বারা চিকিৎসা করা হয়েছে পেপারগুলোতে। টা অসুখ প্রধানহার্পিস জোস্টার, মুখোর প্যারালাইসিস (Bell Palsy), কাশি-শ্বাসকষ্ট, ব্রন, কোমরে ডিস্ক প্রোল্যান্স, ঘাড়ের ব্যথা (spondylosis)


তাঁরা বলছেন, ১৩৫ টার অধিকাংশই নিরপেক্ষতা যাচাইয়ে High risk of bias ক্যাটাগরির, বাকিগুলো unclear ক্যাটাগরির। একটাও Low risk ব্যাটাগরিতে পড়ে না। শেষে ওনারা বললেন, 'আমাদের রিভিউ অনুযায়ী তো কাপিং ওপরের অসুখগুলোয় কার্যকর, তবে স্পষ্ট তথ্যের জন্য আরও বেশি সাবজেক্টের ওপর আরও হাই-কোয়ালিটির গবেষণা দরকার। কেননা যেগুলোর ওপর আমরা রিভিউ করলাম, সেগুলো নিরপেক্ষ নয়।'


Harvard Health Blog-
রিউম্যাটোলজিস্ট Robert H. Shmerling. MD. এর লেখাটা বেশ যুক্তিসংগত। PLos One- প্রকাশিত ২০১৫ সালের একটা রিভিউয়ের (Yuan, 2015) বরাতে তিনি বলেন, "কিছু প্রমান পাওয়া গেছে যে, ঘাড়ব্যথা কোমরব্যথাতে কাপিং দ্বারা উপকার পাওয়া গেছে, কিন্তু প্রমাণগুলো ফাইনাল সিদ্ধাস্ত্রে আসার জন্য খুব সীমিত।" কারণ হিসেবে তিনি জানান, "কাপিং নিয়ে হাই-কোয়ালিটি রিসার্চ সম্ভব হয়নি।"


 
মেডিকেল সায়েন্সে হাই কোয়ালিটি রিসার্চ হলো double-blinded placebo controlled trials; যেখানে রোগী গবেষক কেউ- জানবে না যে, কাকে কী দেওয়া হলোকোন রোগীকে আসল ওষুধ দেওয়া হয়েছে, আর কাকে ওষুধের মতো একটা 'কিছুই না’ (placebo) দেওয়া হয়েছে। ওষুধ নিয়ে পরীক্ষায় একটাকিছুই না' বানানো সম্ভব, কিন্তু কাপিং এর সমতুল্য একটা 'কিছুই না' কীভাবে পাওয়া যাবে ?

  •  ব্যাথা জিনিসটা পরিমাপ করা কঠিন। আগে ব্যথা বেশি ছিল, এখন ব্যথা কমএই মাপজোক কীভাবে হবে ?
কখনও কখনও placeba effect (ব্যথা কমার আশার কারণে ব্যথা কমে যাওয়া) খুব শক্তিশালী হয়। তো এখানে বাথা কাপিং এর কারণে কমলো, নাকি মানসিক কারণে কমলোসেটা বোঝাও কঠিন।
 
তবে, Shmerling সাহেব বলেন, আকুপাংচার যেমন ফেইক করে স্টাডি করা গেছে, কাপিং-এরও একটা ফেইক বের করা যাবে। আর যদি কাপিং আসলেই উপকারী হয়, তাহলে সেটা placebo effect-এর দরুন হয়েছে, নাকি কাপিং-এর নিজের কারণে হয়েছে, সেটা নগণ্য। উপকারী মানে উপকারী, ব্যস। কথা শেষ।


 কাপিং-বিশেষজ্ঞরা নানান অসুখে এই ঘেরাপি দিয়ে থাকেন। যেমন:

  • শরীরের ব্যথা,
  • চর্মরোগ,
  • কোলেস্টেরল কমানো,
  • মাইগ্রেন (আধকপালি ব্যথা),
  • হাঁটু আর্থ্রাইটিস,
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে,
••• কোনো রিষ্ক আছে কি না, জবাবে Shmerling সাহেব বলেন :

"
অধিকাংশ এক্সপার্ট একমত যে কাপিং নিরাপদ। আপনি যদি এক্কেবারে টায়টায় প্রমাণ চান চিকিৎসাটির ব্যাপারে, তাহলে আপনার কাপিং করানোর দরকার নেই। আর যদি মনে করেন, আপনি একটা ট্রাই নেবেন, একটা চিকিৎসা নিয়ে দেখবেন যেটা নিরাপদ এবং ব্যাথাজাতীয় ব্যারামে সন্ত্রানা আরাম প্রদান করবে, তাহলে আপনি করাতে পারেন।"

[
দুই]

এইবার খুব প্লেইন হিসেবে আসেন। রক্ত তো অনেকেই দিয়েছেন। জেনে থাকবেন যে, রক্তদাতার শরীরের জন্য মাঝে মাঝে রক্তদান (blood donation) দারুণ উপকারী। এখন অব্দি রক্তদানের যে যে কল্যাণ জানা গেছে

•••
হৃদরোগ থেকে সুরক্ষা :

২০১৯ সালের এক গবেষণায় ,৬০,০০০ নারীর ডেটা দেখা হয়, যারা কমপক্ষে ১০ বছর ধরে রক্ত দিয়ে এসেছেন। রিসার্চে উপসংহার টানা হয়, দীর্ঘদিন বার বার রক্ত দিলে হার্ট-এট্যাক স্ট্রোক জাতীয় অসুখবিসুখ থেকে সুরক্ষিত থাকা যায় (Peffer, 2019)

ফিনল্যান্ডের গবেষকদের মতে, রক্তদাতার হার্ট-এট্যাক হবার আশঙ্কা ৮৮% কম, যারা দেয় না তাদের চেয়ে (Salonen, 1998) রক্তদাতা ভাবে উপকৃত হন
দেহে আয়রনের মাত্রা বেশি থাকা-টা হার্ট এট্যাকের (acute myocardial infarction) একটা রিস্ক ফ্যাক্টর, রক্ত দিলে তাত্ত্বিকভাবে এই আয়রনের মাত্রা কমে।
  •  কিছু রিসার্চ জানাচ্ছে, রক্ত দিলে রক্তের প্রেসারও কমতে পারে। ২০১৫ সালে বিজ্ঞানীরা ২৯২ জন ডোনারের ব্লাডপ্রেসার পর্যবেক্ষণ করেন, যারা বছরের - বার রক্ত দিয়ে থাকে। এদের অর্ধেকেরই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। প্রেসারের সমস্যা যাদের ছিল, তারা বেশ উন্নতি লক্ষ করল। যত বার রক্ত দিয়েছে, উন্নতি ততই স্পষ্ট হয়েছে (Kamhieh Milz, 2016) |
••• Dr. Gregory Sloop:
  •  Dr. Gregory Sloop জানিয়েছেন, রক্ত দিলে রক্তের সান্দ্রতা (গাঢ়ত্ব) কমে। গাঢ় রক্ত হার্ট-এট্যাক, স্ট্রোক ইত্যাদির (cardiovascular disease) রিস্ক বাড়ায়। তিনি বছরে কমপক্ষে একবার রক্ত দেবার পরামর্শ দিয়েছেন।
••• ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা :

  • নিয়মিত রক্তদান দেহ থেকে যে অতিরিক্ত আয়রন বের করে ফেলে, সেটাকে ক্যান্সারেরও বিরাট ঝুঁকির জিনিস মনে করা হয়। অধিক আয়রন অধিক ফ্রী-রেডিক্যাল বা অক্সিডেন্ট তৈরি করে, যা ক্যান্সার সৃষ্টিতে মূল ভূমিকা রাখে (iron catalyzed free radical mediated oxidative stress) (Zacharski, 2008)
রক্তদাতা লিভার, ফুসফুস, কোলন পাকস্থলীর ক্যান্সার থেকে তুলনামূলক নিরাপদ থাকেন (Gustaf, 2008)

  •  ২০০৭ সালে গবেষকেরা মিলিয়ন রক্তদাতার ডেটা দেখেন। দেখা গেল, অসুখবিসুখে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা ৩০% কম, ক্যান্সারের আশঙ্কা % কম। সিদ্ধান্তে এলেন, রক্তদাতারা গড় হারের চেয়ে বেশি সুস্বাস্থ্য উপভোগ করেন (Edgren, 2007) |
২০১৫ সালের এক স্টাডিতে একই ডেটা নতুন করে চেক করা হলো। অন্যান্য প্রভাবকগুলো সমন্বয় করে গবেষকগণ জানালেন, বছরে একবার রক্ত দিলে শারীরিক অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর রিস্ক গড়ে .% কমে যায়। আরও এমন অসংখ্য বিষয় তুলে ধরা যাবে, যা সংক্ষিপ্ত পরিসরে বলা শেষ করা সম্ভব না।

এখানে উল্লেখ্য,

রক্ত দেবার সময় এক ব্যাগ মানে ৪০০ মি.লি. রক্ত দিই আমরা, আর ওয়েট কাপিং এও ১০০-৫০০ মি.লি. রক্ত টেনে নেওয়া হয়। দুটোই শিরার রক্ত (venous blood) একই বেনিফিটগুলো কাপিং (হিজামা)- না পাবার কোনো কারণই নেই। তাই রক্ত দেবার দরুন রক্তদাতা যে যে উপকার পাবেন, কাপিং থেরাপিতেও রোগীর ঠিক সেই সেই উপকারই পাবেন আশা করা যায়।
এবার এপাশের গবেষণাগুলো দেখি কি বলতে চাচ্ছে।

[
তিন]

বিস্তারিত বলার সুযোগ নেই স্রেফ রিসার্চের সিদ্ধান্তগুলো বলে যাচ্ছি, বিস্তারিত আপনারা রিসার্চপেপার থেকেই বিস্তারিত পড়ে নিয়েন

 
নর্মাল শিরার রক্তের চেয়ে কাপিং- আসা রক্তে অক্সিডেন্টদের পরিমাণ অনেক বেশি (Suleyman, 2014) অর্থাৎ কাপিং দেহ থেকে ক্ষতিকর অক্সিডেন্ট সরিয়ে ফেলে, যা ক্যান্সার থেকে নিয়ে যত কঠিন কঠিন রোগের মূল কারণ। অর্থাৎ এখানে কাপিংটা উৎকৃষ্টমানের এন্টি-অক্সিডেন্ট প্রসেস হিসেবে কাজ করে।

 
কাপিং এর ৩০ দিন পর শিরার রক্তে ভারী ধাতুর (Al, Zn, and Cad) মাত্রা ব্যাপক কমে গেছে (Nafisa, 2018) ভারী ধাতু বেশি হারে অক্সিডেন্ট তৈরি করে অসুখ বানায়, আর বর্তমানে আমাদের মতো দূষিত পরিবেশে বসবাসকারী মানুষদের জন্য এই দিকটায় বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।

 beta thalassemia major, hemochromatosis, sideroblastic anemia—
রোগের কারণে দেহে iron overload হয়, কাপিং এই অতিরিক্ত আয়রন সরিয়ে নেয় (Salah, 2014) এগুলিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য তাই আয়রন-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রোগ থেকে বাঁচতে হিজামা সহজ পথ্য হতে পারে। (পেপারটা অবশ্যই দেখবেন, পিয়ার রিভিউড।)

 
হিজামা স্বাভাবিকভাবেই রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলটা (LDL) কমিয়ে আনে (Majid, 2004) ফলে রক্তনালীতে চর্বি জমে (atherosclerosis) হার্ট এট্যাক স্ট্রোকজাতীয় অসুখ থেকে সুরক্ষা দেয়। total cholesterol 9% কমে যাওয়া এবং HDL cholesterol (ভালোটা) % বেড়ে যাওয়া যদিও খুব বেশি না, তারপরও বিবেচনার দাবি রাখে। তাই রক্তে চর্বি জমা বা হাই-কোলেস্টরেলের রোগীরা এই সমস্যার সহজ সমাধানে হিজামার দ্বারস্থ হতেই পারেন।

 
হিজামা নিদ্রাহীনতা দূর করে ঘুমের কোয়ালিটি বাড়ায় (Selma, 2015) অর্থাৎ নিদ্রাহীনতার শারীরবৃত্তীয় কারণগুলোকে দমন ঘুম সংশ্লিষ্ট বায়োলজিক্যাল বিষয়গুলোতে হিজামা ইতিবাচক প্রভাব রাখে বলে গবেষণায় পাওয়া গেছে।


বিস্তারিত জানতে মূল রিসার্চ পেপার পড়ে দেখুন।
[চার]

এটা নাইজেরিয়ার একটা কেস স্টাডি, রিসার্চ না।
বাকি সবকিছু নর্মাল একজন ৩২ বছরের পুরুষ বছর প্রটেকশন ছাড়া মিলন করেও সন্তান হচ্ছে না। হাসপাতালে তাকে বন্ধ্যা হিসেবে শনাক্তও করে দেওয়া হয়েছে। গবেষকরাও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা আবার করিয়ে অন্য কোনো অসুখ পাওয়া গেল না, মানে লোকটি primary infertility- রোগী। তার বীর্য পরীক্ষা করে সবগুলো মানই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কম পাওয়া গেল।

এবার তাকে মাসে বার হিজামা করানো হলো, তার স্ত্রীকে মাসে একবারএভাবে দুই মাস। আশ্চর্যজনকভাবে দুইমাস পর বীর্যের সবগুলো প্যারামিটার স্বাভাবিক হয়ে গেল ! দ্রুতপতনের যে সমস্যা ছিল, সেটাতেও উন্নতি পাওয়া গেছে। তার স্ত্রীর hCG লেভেল স্বামীর হিজামার আগে ছিল নেগেটিভ, থেরাপির পর হলো পজেটিভ (৪৯.৫৭ mlU/ml), মানে তিনি মা হতে চললেন ! (Senol, 2019)

•••
একইভাবে আরো কিছু স্টাডিতে কাপিংয়ের ফলে ফিমেল ইনফার্টিলিটি প্রবলেম বা বন্ধ্যা নারীদের বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে (Jun-Xiang, 2018) প্রাইমারি ইনফার্টিলিটি বা সেকেন্ডারি ইনফার্টিলিটি থেকেও নিয়মিত একাধিক সেশন হিজামার মাধ্যমে প্রেগনেন্সি লাভেরও বেশ কিছু রেকর্ড রয়েছে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ হাই-কোয়ালিটি রিসার্চের অভাবে শতভাগ সাইন্টিফিক্যালি স্বতঃসিদ্ধভাবে এখনো তা ব্যাখ্যাসহ প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি। তবে গবেষণা না করেই তো আর কাজ হয় না বা প্লাসিবোর কথা অন্ধভাবে বলা যায় না ! (Hassan, 2016)
তাই নারী-পুরুষ কেউ ইনফার্টিলিটি প্রবলেমে ভুগলে কাপিংয়ের সাহায্য নিতে পারেন অবশ্যই, সাইন্টিফিক ব্যাখ্যা এখনো না থাকলে না থাকুক, কাজ হলেই হলো।

[
পাঁচ]

হার্টের ফাংশন যেমন দেখা যায় ECG-তে, ব্রেইনের ফাংশন দেখা হয় EEG-তে (Electro-encephalogram) এর একটা অংশ Beta wave, যা বুদ্ধিবৃত্তিক বিশ্লেষণ ক্ষমতা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়ানোর কন্ট্রোল (cognitive processing and motor control) কেমন তা নির্দেশ করে। আর Gamma waves নির্দেশ করে বোঝা অনুভবের ক্ষমতা (perceptual and cognitive processes) যদি beta gamma ওয়েভ বেশি পাওয়া যায়, তা ব্রেইনের সূক্ষ্ম উচ্চতর ক্ষমতা (higher mental functions) বেশি বোঝায়।

৪৯ জন পুরুষের ওপর নাইজেরিয়ার ফিজিওলজি ডিপার্টমেন্ট গবেষণা করে জানিয়েছে, কাপিং-এর ফলে beta gamma ওয়েভের স্পন্দন ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তাঁরা উপসংহার টেনেছেন, ব্রেইনের সামনের দিককে কাপিং সক্রিয় করে তুলেছে, যা সম্ভবত বিভিন্ন নিউরোকেমিক্যাল বৃদ্ধি করার মাধ্যমে। তাই বিভিন্ন মানসিক মস্তিষ্কের অসুখে এর কার্যকারিতা থাকতে পারে (Faruk, 2019)

[
ছয়]

ব্যথা পরিমাপের একটা পদ্ধতি আছে নাম Visual Analogue Scale. মাইগ্রেনের (আধকপালি) বাথা কতটা তীব্র এবং জীবনকে ব্যাহত করছে, তা পরিমাপ করা হয় Migraine Disability Assessment (MIDAS) Test দিয়ে। তুর্কী ডাক্তারদের এক গবেষণায় এসেছে, মাসে বার যাদের

কাপিং হয়েছে তাদের চেয়ে ১২ মাসে ১২ বার যাদের দেওয়া হয়েছে, তাদের এই দুই স্কোর উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি (Suleyman, 2019)

সৌদি আরবের ডাক্তারদের এক রিসার্চেও একই ফল এসেছে (Abdullah Kaki, 2019)
মনে রাখা দরকার, এসব ডাক্তাররা হোমিওপ্যাথি-ইউনানী বা কোনো অলটারনেটিভ মেডিসিনের ডাক্তার না, পশ্চিমা মেডিকেল সায়েন্সেরই ডাক্তার। তাছাড়াও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কারণ-সংশ্লিষ্ট ব্যথা উপশমে কাপিং করার বিষয়টি সারা বিশ্বেই প্রচলিত।

[
সাত]

ইরাকে ডাক্তাররা ৫০ জন পুরুষ ৫০ জন নারীর ওপর গবেষণা চালিয়েছেন, সবাই ডায়বেটিস উচ্চরক্তচাপের রোগী ছিল। হিজামার আগে আগে এবং হিজামার ৭২ ঘণ্টা পর তাদের ব্লাড স্যাম্পল নিয়ে প্যারামিটারগুলো দেখা হলো (Hesha, 2020) নিচের রিডিং গুলো স্পষ্টত উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে
  • cholesterol
  • triglyceride
  • low-density lipoprotein
  • blood sugar level
  • ferritin
  • urea
  • creatinine
  • blood pressure
অর্থাৎ যারাই কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন, হিজামা তাদের জন্য উৎকৃষ্ট চিকিৎসা হতে পারে। একইভাবে রক্তে ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেলেও হিজামা করানো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন উত্তম সমাধান হতে পারে।

ব্লাড প্রেসার আর ব্লাড সুগারের বিষয়টি মূলত লাইফস্টাইলের সাথে সম্পৃক্ত, তাই এই দুটোকে পার্মানেন্টলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজে খাদ্যাভ্যাস লাইফস্টাইল বদলানো প্রয়োজন, আর হঠাৎ খুব বেশি বেড়ে গিয়ে সমস্যা হলেই কেবল আলাদাভাবে এর জন্য হিজামা করার কথা আসে।

আমেরিকাতে ১৮শ ১৯শ শতকে এই থেরাপির প্রচলন ছিল ব্যাপক। পশ্চিমা মেডিসিনে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কাপিং থেরাপির অস্তিত্ব ছিল (Griffith, 1938 ) এমনকি ডক্টর উইলিয়াম ওসলার ১৯৩১ সালে তাঁর বিখ্যাত মেডিসিন টেক্সটবুক The Principles and Practices of Medicine- pneumonia acute myelitis এর চিকিৎসা হিসেবে কাপিং রিকমেন্ড করেছেন।

এরপর কী এমন হলো যে, পশ্চিমা মেডিসিন একে কুসংস্কার বলে পরিত্যাগ করলো, বিপরীতে চীন একে ১৯৫০ থেকে অফিসিয়ালি গ্রহণ করে নিল, সেটা ভিন্ন আলাপ ! পুরোপুরি বুঝতে হলে অর্থনীতি, রাজনীতি সবকিছু সামনে নিয়ে সে আলাপে আসতে হবে। বিজ্ঞান বলি আর যাই বলি, বাস্তবে সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হয় পলিটিক্স দ্বারা ! আর বাস্তবতা হচ্ছে, এই ধরনের অল্টারনেটিভ মেডিসিন গুলো মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়লে তা বর্তমান বিশ্বের সবচাইতে বড় মাল্টি-ট্রিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট বিজনেস বা ফার্মাসিটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিগুলোর অস্তিত্বের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে ! এটা অস্বাভাবিক কিছু না। আর অস্তিত্ব রক্ষায় ক্যাপিটালিস্ট এই ইন্ডাস্ট্রিগুলো যেকোনো কিছু করতে রাজি, তাই কাপিংয়ের মত অল্টারনেটিভ মেডিসিন গুলো মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়লে এগুলোর বিপরীতে শতশত নতুন ভুয়া গবেষণা তৈরি করাও 'উনাদের' বাম হাতের কাজ !

তেমনি আরেকটি কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে— "বর্তমান সময়ে অধিকাংশ ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি-প্রণীত যে ওষুধগুলো আমরা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক, হাই-প্রেশার, থাইরয়েড
ইত্যাদি অধিকাংশ এনসিডি ডিজিজের ক্ষেত্রে খাই, সেগুলো মূলত রোগ মুক্তির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় না, তৈরি করা হয় রোগকে নিয়ন্ত্রিত রাখার উদ্দেশ্যে..." !!!
বুঝলে ভালো, না বুঝলে কি আর করার ! সেসব পলিটিক্সের গল্প হবে আরেকদিন, আজ এই পর্যন্তই থাক।
ভাবতে থাকুন, সতর্ক থাকুন। রোগমুক্ত-ওষুধমুক্ত সুস্থ জীবনযাপন করুন। হিজামা চাইলে করান, না করাইলে নাই। আলবিদা।

সমাপ্ত


খুলনাতেই পাচ্ছেন এখন পরুষ মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা ইয়োগা, আকুপ্রেশার থেরাপি, প্রানায়ম (শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম),
হিজামা (কাপিং থেরাপি)

নতুন সেশনে ভর্তি শুরু হয়েছে।

পরুষ মহিলাদের জন্য আলাদা সেশনের বাবস্থা এবং প্রশিক্ষণের বিষয়সমুহঃ

  • ইয়োগা
  • আকুপ্রেশার থেরাপি
  • প্রানায়ম (শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম)
  • হিজামা (কাপিং থেরাপি
বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন
মোবাইলঃ০১৮১৮১৪৮১৯৮,০১৭১৭৮০৩৭২৭

Comments